বিরাটের রনজি ম্যাচ ঘিরে বিশৃঙ্খলায় আহত বহু

ক্রীড়া দেশ

নিউজ পোল স্পোর্টস ব্যুরো : বহু প্রতীক্ষিত রনজি ট্রফি ম্যাচে ১২ বছর পর কিং কোহলির প্রত্যাবর্তন ঘিরে চরম বিশৃঙ্খলা দেখা গেল। দীর্ঘদিন পর ঘরোয়া ক্রিকেটে নামছেন বিরাট, সেই উত্তেজনায় স্টেডিয়ামের বাইরে উপচে পড়া ভিড় জমেছিল। সেই ম্যাচ দেখতে হাজার হাজার দর্শক আসবেন, স্টেডিয়ামের পক্ষ থেকে সেই প্রত্যাশা ছিল। কিন্তু দিল্লি স্টেডিয়ামে সেই প্রত্যাশার চেয়ে ভিড় আরও ছাপিয়ে গেল। পুলিশ ও প্রশাসনের অপ্রস্তুত অবস্থার কারণে পরিস্থিতি হাতের বাইরে চলে যায়। প্রবল ভিড় সামলাতে হিমশিম খেতে হয় নিরাপত্তারক্ষীদের। হুড়োহুড়ির ফলে পদপিষ্ট হয়ে আহত হন বহু মানুষ।

কিং কোহলির মতো তারকা ক্রিকেটার দীর্ঘদিন পর রনজি ট্রফি খেলতে নামবেন, এমন খবরে উচ্ছ্বসিত হয়ে ওঠেন তাঁর ভক্তরা। টিকিটের জন্য ম্যাচের দিন ভোর থেকেই স্টেডিয়ামের বাইরে লম্বা লাইন পড়ে যায়। কিন্তু প্রবেশপথ ছিল সীমিত, সেই সঙ্গে পর্যাপ্ত নিরাপত্তার ব্যবস্থা না থাকায় পরিস্থিতি ক্রমেই খারাপ হতে থাকে। খেলা শুরু হওয়ার ঠিক আগে একসঙ্গে প্রচুর মানুষ স্টেডিয়ামে ঢোকার চেষ্টা করেন। প্রবল চাপে ব্যারিকেড ভেঙে পড়ে, আর তখনই ঘটে বিপত্তি। পুলিশ ও নিরাপত্তারক্ষীরা পরিস্থিতি সামলানোর চেষ্টা করলেও, ক্রমশ পরিস্থিতি হাতের বাইরে চলে যায়। ধাক্কাধাক্কি, চিৎকার-চেঁচামেচি চলতে থাকে, অনেকে মাটিতে পড়ে যান এবং পদপিষ্ট হন।

চরম বিশৃঙ্খলার পরিস্থিতির মধ্যে পড়ে বহু মানুষ আহত হন। প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, বেশ কয়েকজন গুরুতর আহত হয়েছেন, যাঁদের মধ্যে মহিলা ও শিশুরাও রয়েছেন। পুলিশ আহতদের উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যায়। স্টেডিয়ামের বাইরে পরিস্থিতি এতটাই নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায় যে অতিরিক্ত পুলিশ বাহিনী নামাতে হয়। এত বড়ো তারকা ক্রিকেটারের খেলা থাকলেও কেন যথাযথ নিরাপত্তা ব্যবস্থা রাখা হয়নি, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন অনেকে। পুলিশ ও স্টেডিয়াম কর্তৃপক্ষের গাফিলতির কারণেই এই বিশৃঙ্খলা তৈরি হয়েছে বলে অভিযোগ। অনেকেই বলছেন, আগেই অনলাইন টিকিট ব্যবস্থা আরও জোরদার করা হলে হয়ত এই পরিস্থিতি এড়ানো যেত।

এই ঘটনার পর বিসিসিআই ও সংশ্লিষ্ট রাজ্য ক্রিকেট সংস্থা দ্রুত তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে। বিসিসিআই-এর এক কর্তা জানান, ‘এমন ঘটনা অপ্রত্যাশিত। আমরা সমস্ত বিষয় খতিয়ে দেখব এবং ভবিষ্যতে এমন পরিস্থিতি যাতে আর না ঘটে সেই বিষয়ের সতর্ক থাকব।’ অন্যদিকে, বিরাট কোহলি নিজেও এই ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, ‘আমার ভক্তদের এমন কষ্ট পেতে দেখে সত্যিই খারাপ লাগছে। আশা করি, আহতরা দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠবেন। আমি সর্বদা ওনাদের পশে আছি।’

দীর্ঘ ১২ বছর পর রঞ্জি ট্রফি খেলছেন বিরাট। দিল্লি বনাম রেলওয়ে ম্যাচ নিয়ে দর্শকদের উত্তেজনা ছিল তুঙ্গে। খেলার প্রথম দিনেই ১০ হাজার দর্শক স্টেডিয়ামে এসেছিলেন বলে কর্তৃপক্ষ সূত্রে খবর। প্রথমে ম্যাচটি লাইভ স্ট্রিমিং করানো হবে বলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু পরে সেই সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসে বিসিসিআই জানায়, গ্রুপ পর্বের তিনটি ম্যাচ সম্প্রচার হবে জিও সিনেমায়। তিনটি ম্যাচ হল – কর্ণাটক বনাম হরিয়ানা, বাংলা বনাম পাঞ্জাব, জম্মু-কাশ্মীর বনাম বরোদা। কিন্তু কিং কোহলির দর্শকদের উন্মাদনার কথা ভেবে দিল্লি বনাম রেলওয়ে ম্যাচটি জিও সিনেমায় সম্প্রচারিত হয়। কিন্তু তাও স্টেডিয়ামে ভিড় জমাতে থাকে দর্শকরা কিংকে দেখার জন্য। এই ভিড় সামলাতে বাড়তি নিরাপত্তার ব্যবস্থা করেছিল দিল্লির ক্রিকেট সংস্থা। কিন্তু তাতেও বিশৃঙ্খলা এড়ানো গেল না। হড়োহুড়ির জেরে পদপিষ্ট হয়ে আহত হয় অনেকেই। এই ঘটনার পর নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে বড়সড় প্রশ্ন উঠে এসেছে। বড় ম্যাচের আগে প্রশাসন কতটা প্রস্তুত, তা নিয়ে শুরু হয়েছে চর্চা।