Space: পৃথিবীর বাইরে জীবন! মহাকাশে সুনীতার খাবার ও ঘুমের সংগ্রাম

প্রযুক্তি বিজ্ঞান

নিউজ পোল ব্যুরো: মহাকাশে (Space) খালি পেটে দিন কাটাচ্ছেন না সুনীতারা,তবে কেন তিনি অত শীর্ণ হয়ে গেছে? পুষ্টির অভাব কি তাদের মধ্যে রয়েছে? মহাকাশচারীদের (Astronautics) জীবন কেমন হয়? তারা কিভাবে থাকেন এবং কি খান? তবে কেন তার চেহারা এমন হয়েছে? তাদের পুষ্টির ঘাটতি (Nutritional deficiency) কি ঘটছে?

সম্প্রতি সুনিতা উইলিয়াম (Sunita Williams) জানিয়েছেন, মহাকাশে গিয়ে সবচেয়ে বেশি যে অভাবটি অনুভব করেন তা হল, বাড়ির খাবারের অভাব। দীর্ঘ সময় মহাকাশে (Space) থাকার ফলে যে খাবার খেতে হয়, তা একেবারে পৃথিবীর মতো নয়। সুনীতার সাম্প্রতিক ছবিতে তাকে যেভাবে শীর্ণ এবং ক্লান্ত দেখাচ্ছে, তা অনেকের মনে প্রশ্ন সৃষ্টি করেছে,তবে কী তার শারীরিক অবস্থা (Physical condition) খারাপ?

মহাকাশে খাবার নির্বাচন (Food selection) করতে হয় মাইক্রোগ্র্যাভিটির কথা মাথায় রেখে। মহাকাশে কিছু খাবার নিষিদ্ধ, যা বিপদ ঘটাতে পারে। মহাকাশচারীদের পুষ্টি নিশ্চিত করতে তাদের জন্য হালকা পুষ্টিকর Nutritious এবং সুস্বাদু (Delicious) ব্যবস্থা করা হয়, যা দ্রুত নষ্ট হয় না এবং দ্রুত হজম হয়। শূন্য মাধ্যাকর্ষণের (Gravity) প্রভাবে মহাকাশচারীদের ওজন কমে যায় তাই তাদের উচ্চ ক্যালোরি (High calories) খাবার দেওয়া হয়। বর্তমানে মহাকাশচারীদের পছন্দের খাবারও দেওয়া হচ্ছে যেমন কোরিয়ার (Korean) মহাকাশচারী তার দেশের ঐতিহ্যবাহী কিমচি নিয়ে যেতে চেয়েছিলেন এবং তা তাকে দেওয়া হয়েছিল।

এখনও পর্যন্ত সুনীতা উইলিয়ামসের চেহারার পরিবর্তনের কারণ হল দীর্ঘ সময় ধরে মহাকাশে শূন্য মাধ্যাকর্ষণের প্রভাবে তার শরীরের উপর নানা ধরনের প্রভাব পড়েছে। এই কারণে তার ওজন কমেছে, রক্তচাপের (Blood pressure) তারতম্য হয়েছে। এবং শরীরের তরল জমা হচ্ছে। মহাজাগতিক বিকিরণ (Cosmic radiation) ও শরীরের জন্য ক্ষতিকর। মহাকাশ স্টেশনে একদিনও কাটানো কঠিন, সেখানে সুনিতা উইলিয়াম (Sunita Williams) এবং তার সতীর্থরা ছমাসেরও বেশি সময় ধরে অবস্থান করছেন।

সুনীতাদের যাত্রা শুরু হয়েছিল গত বছর জুনে, মহাকাশযান বোয়িং সিএসটি-১০০ স্টারলাইনার ক্যাপসুলে (StarLiner Capsule)। যদিও তাদের ফিরে আসার কথা ছিল আট দিনের মধ্যে, যান্ত্রিক ত্রুটির (Mechanical failure) কারণে তারা মহাকাশ স্টেশনে অনির্দিষ্ট সময়ের জন্য আটকে যান। মহাকাশে তাদের দিন কাটানো অনেক কঠিন ছিল। এই ধরনের পরিস্থিতির মোকাবিলা করার জন্য মহাকাশচারীদের কঠোর প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। এই প্রশিক্ষণ শারীরিক, মানসিক এবং বুদ্ধিমত্তার মধ্যে বিভিন্ন দিক দেখার মাধ্যমে দেওয়া হয়।

সুনীতারা যে দীর্ঘ সময় মহাকাশে কাটাচ্ছেন, তার কারণে মানসিক চাপের সঙ্গেও তারা মোকাবিলা করছেন। মহাকাশে পরিবার ও সমাজ থেকে বিচ্ছিন্ন থাকার কারণে মানসিক সমস্যা হতে পারে। কিন্তু সুনিতা জানিয়েছেন, তিনি ভালো আছেন। কারণ তিনি পেশাদার এবং প্রতিকূল পরিস্থিতির সাথে মানিয়ে নিতে শিখেছেন। মহাকাশে ঘুমের সমস্যা, শরীরের দুর্বলতা এবং ভাইরাস সংক্রমনের ঝুঁকি থেকেও তারা প্রভাবিত হন।

অতীতে, সুনীতার মতো মহাকাশে দীর্ঘ সময় কাটানো প্রথম তিন মহাকাশচারী ছিলেন- ইউরি গিদজেনকো, সের্গেই ক্রিকালেভ এবং বিল শেফার্ড। তারা মহাকাশে কয়েক মাস কাটিয়ে গবেষণা করেছিলেন। বর্তমানে সুনিতা উইলিয়ামস তার সতীর্থদের সঙ্গে সেই রেকর্ড ভাঙছেন।

মহাশূন্যে দীর্ঘ সময় থাকার কারণে আরো এক সমস্যা হল মানুষের জীবনের স্বাভাবিক রিদম ও ঘুমের সমস্যা। এই ধরনের পরিস্থিতিতে মহাকাশচারীদের জন্য বিশেষ প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। যা তাদের শারীরবৃত্তীয় প্রক্রিয়াকে সঠিকভাবে চালানোর জন্য সহায়ক।

এখন মহাকাশ ট্যুরিজমের (Tourism) সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা চলছে, ভবিষ্যতে সাধারণ মানুষকেও মহাকাশে নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ইসরো (ISRO) বর্তমানে তাদের ‘গগনযান’ মিশনের জন্য মহাকাশচারীদের প্রশিক্ষণ দিচ্ছে এবং আগামী দিনে ভারতের নিজস্ব মহাকাশ স্টেশন তৈরির পরিকল্পনা রয়েছে।