নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: বিশ্বের যানজটপূর্ণ ব্যস্ততম যানজটের তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে কলকাতা। পিছিয়ে নেই ভারতের অন্য মেট্রো শহরগুলো। তৃতীয় ও চতুর্থ স্থানে বেঙ্গালুরু ও পুনের নাম উঠে এসেছে। টমটম একটি আন্তর্জাতিক সংস্থার পরিসংখ্যানে উঠে এসেছে এই তথ্য। এই সংস্থার প্রকাশিত তথ্যে আরও জানা গেছে, এই সংস্থার তালিকায় ১৮ তম স্থানে রয়েছে হায়দরাবাদ। ৩১ তম স্থানে চেন্নাই। ৩৯ তম স্থানে মুম্বাই, ৪৩ তম স্থানে আহমেদাবাদ , ৫২ তম স্থানে রয়েছে জয়পুর এবং ১২২ তম স্থানে রয়েছে দেশের রাজধানী নয়া দিল্লি।
সাম্প্রতিক করোনা মহামারির সময় সারা বিশ্বের পাশাপাশি স্তব্ধ হয়ে গেছিল ভারতের জনজীবন। এরপর যখন আস্তে আস্তে স্বাভাবিক ছন্দে ফিরতে শুরু করল সবকিছু তখন দেখা গেল এক অদ্ভুত দৃশ্য। এতদিন যেসব মানুষেরা বাসের ট্রামে ভুলে অফিস আদালতে যেতেন, তারাই আজ চলেছেন নিজেদের গাড়িতে। ভাইরাসের আতঙ্কে নিজেদেরকে বাঁচিয়ে রাখার এই আপ্রাণ প্রয়াসে বিশ্বের তাবড় তাবড় শহরগুলির কাছে সবচেয়ে বড় প্রশ্ন চিহ্ন তুলে দিয়েছে।
শহরের আয়তন বা রাস্তার সীমা সেই অর্থে বাড়েনি। কিন্তু বেড়ে গিয়েছে গাড়ির সংখ্যা। আর যার ফলে রাস্তায় বেরোলে যানজটে আটকে পড়া নিত্য নৈমিত্তিক ঘটনা। তাই লাইন দিয়ে চলেছে যানবাহন। যার ফলে ধীরগতিতে চলছে গাড়ি। একটি সিগন্যাল থেকে আরেকটি সিগন্যাল যেতে না যেতেই কমছে গাড়ির চাকা। যানজটে নাস্তানাবুদ সাধারণ মানুষ। শহর কলকাতার এই চিত্রটি আমাদের সকলের কাছে অতি পরিচিত।
আন্তর্জাতিক এই সংস্থার রিপোর্টে বলা হয়েছে, কলকাতার মধ্যে কোন একটি এলাকায় বাসে বা গাড়িতে করে এক জায়গা অন্য জায়গায় যেতে প্রতি ১০ কিলোমিটারে ৩৪ মিনিট ৩৩ সেকেন্ড সময় লাগছে। এই একই অবস্থা ভারতের অন্যতম টেকস্যফি সিটি বেঙ্গালুরু। তাদের তথ্যে উঠে এসেছে এখানে একটি এলাকায় ১০ মিনিট পর যেতে সময় লেগেছে ৩০ থেকে ৩৫ মিনিট। এর ফলে কলকাতায় বছরে এক ব্যক্তি গড়ে ১১০ ঘন্টা ধরে সময় নষ্ট করছেন। যানজটের সঙ্গে যোগ হয়েছে দূষণের কারণ এত বিপুল পরিমাণ গাড়ি থেকে নির্গত ধোয়া পরিবেশের দূষণ ঘটিয়ে চলেছে । এর থেকে বাঁচার উপায় কী? কেউ কেউ মনে করছেন এই গণ পরিবহণ ব্যবস্থা বিশেষ করে মেট্রোরেল ও কলকাতা থেকে বিলুপ্ত হয়ে যাওয়া ট্রেন বাঁচাতে পারে আমাদের তিলোত্তমার ফুসফুসকে, না হলে অচিরেই কলকাতার বুকে নেমে আসবে অদ্ভুত আঁধার, আশঙ্কা বিজ্ঞানীদের। তখন কোন আদালতের নির্দেশ দিয়েও এই বিস্ময় পরিবেশ থেকে মুক্তির পথ থাকবে না।